২০ শব্দের হাসির এবং রোমান্টিক সেরা কিছু বাংলা অনুগল্প
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক পাঠিকা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আপনাদের মধ্যে অনেকেই আমাদের কাছে রিকুয়েষ্ট করেছেন কিছু সেরা অনুগল্প দেওয়ার জন্য। আজকে আমরা আপনাদের সামনে নিয়ে আসলাম বেশকিছু হাসির অনু গল্প, রোমান্টিক অনুগল্প, ভালোবাসার অনু গল্প, প্রেমের অনুগল্প সহ নানান রকমের অনুগল্প যা আপনাদের ভালো লাগবে আশা করছি। ছোটগল্প ও অনুগল্পের পার্থক্য বুঝতে পারবেন এই পোস্টটি থেকেই। অনুগল্প মানে কি অনেকেই জানেন না তারা গল্প পড়ার মাধ্যমে সবকিছু ভালোভাবে জানতে পারবেন। এখানে বিভিন্ন অনুগল্প এবং অনুগল্পের উদাহরণ সহ অনুগল্পের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। বনফুলের অনুগল্প সহ বাংলা অনুগল্প ও অনু গল্পের লিংক সহ বিস্তারিত তথ্য এই পোস্টে জানবো।
নিশ্চয়ই আপনি গুগলে বা অন্য কোনো সার্চ ইঞ্জিনে ২০ শব্দের অনুগল্প খোজার চেষ্টা করছিলেন। অতঃপর আপনি আমাদের এই স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন সুন্দর ওয়েবসাইটে অনুগল্প পড়তে চলে এসেছেন তাই নয় কি? নিশ্চিন্তে ভাবতে পারেন সুন্দর সুন্দর অনুগল্প পড়ার জন্য আপনি একদম সঠিক ওয়েবসাইটেই ভিজিট করেছেন। এখানে অনুগল্প প্রতিযোগিতায় কোন গল্পটি আপনার ভালো লেগেছে জানাতে ভুলবেন না। আবার আপনি অনুগল্প pdf আকারে পেতে চাইলে এই পেইজকে পিডিএফ এ কনভার্ট করুন। তো চলুন পড়া শুরু করা যাক আজকের সেরা অনুগল্প সমূহ।
স্টাইলিশ বাংলা ক্যাপশন [love-sad-funny-islamic]
২০ শব্দের হাসির এবং রোমান্টিক সেরা কিছু বাংলা অনুগল্প
অনুগল্প লেখার নিয়ম বা অনুগল্প লেখার কৌশল
বাংলা সাহিত্যে অনুগল্প বলতে ছোটগল্পের এমন একটি বৈশিষ্ট্যের গল্পকে বোঝায় যেখানে মাত্র অল্প কিছু কথা শব্দের মাধ্যমে বাস্তবতা তুলে ধরা যায়। অনুগল্প ১০ শব্দের, ২০ শব্দের অথবা ৫০ শব্দের লিখতে পারেন। অনুগল্প কাকে বলে এই পোস্টটি পড়লেই বুঝতে পারবেন আশা করছি।
সেরা কিছু বাংলা অনুগল্প
এখানে বাছাইকৃত ২০ শব্দের হাসির এবং রোমান্টিক সেরা কিছু বাংলা অনুগল্প তুলে ধরা হলো। আপনারা ধৈর্য সহকারে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়বেন আশা করছি।
বন্ধু আরিফ সবসময় আমার খাতা দেখে লিখেই পাশ করতো। শেষ পর্যন্ত আজ আমাকে নকল করে আমার বউয়ের বোনকেও বিয়ে করলো! মেয়েদের পিক.কম
গল্পের বিশ্লেষণঃ আরিফ নামে আমার একটি বন্ধু ছিলো। আমরা ছোটবেলা থেকে একই সাথে পড়ালেখা করতাম একই ক্লাসে। আমি মোটামুটি পড়ালেখা করলেও ও কখনোই পড়াশোনা তেমন একটা করতো না। সবসময় পরীক্ষায় আমার খাতা নকল করেই পাশ করতো। যদিও আমি ওকে আমার খাতা দেখানোর জন্য কোনো সময় আপত্তি করিনি। কারণ ও আমার একটা মাত্র বেস্ট ফ্রেন্ড বলে কথা এটুকু ওর জন্য করতেই পারি। এভাবে যেমন পরীক্ষায় আমাকে নকল করতো তেমনি আমার প্রতিটি বিষয় ও নকল করতো। একটা সময় আমি বিয়ে করলাম এর কিছুদিন পর ও আমার বউয়ের বোনকে অর্থাৎ আমার শালীকা কে বিয়ে করে আমাকে জীবনের সবচেয়ে বড় নকল টা করে ফেললো। একরকম লেভেলের নকল বাজ বন্ধু কার কার আছে কমেন্ট করুন সেই বন্ধুর নাম সহ।
আরেহ! আপনার এন্ড্রয়েড ফোন নেই? —বাপু সরম দিয়োনা, চালাতে পারিনা! “এরকম আনস্মার্ট হইলে দেশ এগোবে?” বলেই হতাশাগ্রস্ত ছিনতাইকারী হাঁটতে লাগলো। মেয়েদের পিক.কম
গল্পের বিশ্লেষণঃ একজন গ্রামের সহজসরল মধ্যবয়স্ক চাচা ঢাকা শহরে এসেছেন ঘুরতে। তিনি স্বল্প শিক্ষিত ও গ্রামের মানুষ হওয়ায় স্মার্ট ফোন ব্যবহার করেন না। কারণ স্মার্ট ফোন অপারেট করতে তিনি জানেন না। রাতের ঢাকা শহরে তিনি একা একা হেঁটে চলেছেন আপন মনে। কিন্তু হঠাৎ একজন ছিনতাইকারী তার রাস্তা আটকিয়ে বললো “যা আছে বের করে দিন চাচা, নাহলে এই করবো সেই করবো ইত্যাদি” এই পরিস্থিতিতে চাচার কাছে থাকা বাটন মোবাইল ফোনটি ছিনতাইকারীকে দিয়ে দিলো চাচা। ছিনতাইকারী আশা করেছিলো একটি স্মার্ট ফোন অন্তত থাকবে। কিন্তু বাটন ফোন দেখে ছিনতাইকারী হতাশ হয়ে চাচাকে বলে আপনি এতো ব্যাকডেটেড কেন? এই স্মার্ট যুগে কেউ এখনো বাটন ফোন ব্যবহার করে? চাচা উত্তরে বলে আমি স্মার্ট মোবাইল অপারেট করতে পারিনা। তখন চাচার বাটন মোবাইল চাচাকে ফেরত দিয়ে ছিনতাইকারী হতাশ হয়ে হাঁটা শুরু করলো নিজ গন্তব্যে।
পুত্র দৈনিক স্কুল থেকে এসে সর্বপ্রথম দাঁত ব্রাশ করে। —মা মহাখুশি। পিতা মনে মনে “বেটা বজ্জাত, এইকাম আমিও হাইস্কুলে করতাম”! মেয়েদের পিক.কম
গল্পের বিশ্লেষণঃ ছেলে প্রতিদিন স্কুল থেকে এসে দাঁত ব্রাশ করে এতে মা অনেক খুশি হয়। কিন্তু কেন দাঁত ব্রাশ করে এটা মা না বুঝলেও বাবা কিন্তু ঠিকই বুঝতে পারে। বাবাও ওই বয়সে স্কুলে বন্ধুদের সাথে ধুমপান করে বাসায় এসে দাঁত ব্রাশ করতো। তাই বাবা বিষয়টি বুঝতে পেরে ছেলেকে মনে মনে গালি দিতে থাকে।
বহুকাল পরে প্রিয় মানুষটিকে দেখে চিনতে কোনো ভুল হয়নি আমার! —তবে তার কি হলো? আমায় দেখে না চেনার ভান করলো! মেয়েদের পিক.কম
গল্পের বিশ্লেষণঃ একদিন হঠাৎ সেই প্রাক্তন ভালোবাসার মানুষের সাথে আমার দেখা হয়ে যায়। আমি তাকে দেখার সাথে সাথেই চিনতে পারি। আমি তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করতে গেলে সে আমাকে না চেনার ভান করে আমাকে ইগনোর করে চলে যায়। অর্থাৎ আমাকে সে না দেখার ভান করে। তবে আমি আশা করেছিলাম সে আমাকে দেখে আমার মতই বিস্মিত হয়ে আমার সাথে কথা বলার জন্য এগিয়ে আসবে, কিন্তু তা হয়নি।
কিছু অসাধারণ ভালোবাসার রোমান্টিক ছন্দ
সব মেয়েদের ব্যাগে “তোমায় অনেক ভালোবাসি” এইরকম চিঠি রেখে দিই। চিঠিতে কোনো নাম লিখিনি। —আজকে সকল মেয়েই যেন কাউকে খুঁজছে। মেয়েদের পিক.কম
গল্পের বিশ্লেষণঃ ক্লাসে মজা করে একদিন সব মেয়েদের ব্যাগের মধ্যে বইয়ে একটি চিঠি রাখি। সেখানে লেখা ছিলো আমি তোমাকে ভালোবাসি। এটা এজন্যই মূলত লেখা যেন সবার সাথে মজা করা যায়। পরদিন স্কুলে এসে দেখি সব মেয়েরাই কাউকে খুঁজছে। অর্থাৎ আমার রাখা চিঠিকে কেন্দ্র করে তারা ওই চিঠির প্রেরককে খুঁজে চলেছে। আমি মিটিমিটি হাসলাম, কারণ উদ্দেশ্য সফল।
সীতাহাড়, চুড়ি, নাকফুল ও দুলসহ বাইশ ভরির ইমিটেশনের অলংকার বাসা থেকে চুরি হয়! চোরের চিঠি “ইমিটেশন পরে ইন্টারনেটে ছবি দিবেননা! মেয়েদের পিক.কম
গল্পের বিশ্লেষণঃ এক মহিলা নকল স্বর্ণের গহনা পরিধান করে ফেসবুক নিয়মিত ছবি আপলোড করেন। এই ছবিগুলো একসময় এক চোরের নজরে আসে এবং চোর ওই গহনাগাঁটি চুরি করার পরিকল্পনা করে বসে। একসময় বাসা থেকে গহনাপত্র চুরি হয় যায়। চুরি করা গহনাপত্র যে আসল নয় এটা চোর বুঝতে পারার পর আক্ষেপ প্রকাশ করে ওই মহিলা বরাবর একটি উড়োচিঠি পাঠায়।
রনি নামের মেয়ের সঙ্গে প্রেম করছি। —সাঈম বললো, বিশেষত কী? উত্তর দিলাম, রনি নাম শুনে ছেলে না মেয়ে কেউ বুঝবেনা। মেয়েদের পিক.কম
গল্পের বিশ্লেষণঃ অনেক খোজাখুজি করে রনি নামের একটি মেয়ের সাথে প্রেম করতে সফল হলাম। কারণটা বলি, রনি যেহেতু ছেলেদের নামও হয় আবার মেয়েদের নামও হয় সেক্ষেত্রে এটা মন্দ নয়। আমার ইচ্ছা বলে কথা, তো বন্ধু সাঈম বললো এই নামের বিশেষত কী? আমি উত্তরে বললাম যেন কেউ নাম শুনে বুঝতে না পারে যে রনি ছেলে নাকি মেয়ে।
ফেসবুকে রান্নার ভিডিও মনে করে দেখতে লাগলাম। ডাল, চাল, আটা, চিনি, মধুর মিক্সিং মুখে লাগানো শুরু করলো। —ফেসিয়াল ভিডিও ছিলো! মেয়েদের পিক.কম
গল্পের বিশ্লেষণঃ ফেসবুকে ভিডিও দেখতে দেখতে একটি ভিডিও নজরে আসলো। রান্নার উপকরণ ও মশলাদি দেখে একপ্রকার নিশ্চিত হয়েই ভিডিও দেখা শুরু করলাম। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে বুঝতে পারলাম আসলে ওটা রান্নার ভিডিও নয়, বরং ওটা ফেসপ্যাক বানানোর ভিডিও ছিলো।
লিপির জন্য ছেলে দেখা হচ্ছে। দাদি তৎক্ষনাৎ রেগে বললো, “লিপির শান্তির দিকটাও ভেবো বৌমা, সুখের জন্য টাকাই মূখ্য বিষয় নয়!” মেয়েদের পিক.কম
গল্পের বিশ্লেষণঃ লিপি নামের এক যুবতীর বিয়ের জন্য উপযুক্ত ছেলে দেখা চলতেছে। এখানে লিপির বাবা-মা ছেলের টাকা পয়সা এবং বাড়ি-গাড়িকেই অতি গুরুত্ব সহকারে দেখছে। ছেলে মানুষ হিসেবে কেমন, লিপি ওই ছেলের সাথে সুখি হবে কিনা এগুলো মূল্যায়ন করছে না। এগুলো দেখে লিপির দাদি রেগে প্রতিবাদ জানিয়ে বলে শুধু টাকা পয়সা দেখে বিয়ে দিয়ো না, সে সুখী হবে কিনা এই বিষয়টিও ভেবে সিদ্ধান্ত নিয়ো।
আমি সাধুবাবা সেজে প্রেমিকা মিমিকে বললাম, —সত্যি বলবি, তোর কয়টা প্রেমিক? মিমি ডান হাত শেষ করে বাম হাতের আঙুল গুনছে! মেয়েদের পিক.কম
গল্পের বিশ্লেষণঃ আমার গার্লফ্রেন্ড মিমিকে পরীক্ষা করার জন্য একদিন সাধুবাবার ভান ধরে বসলাম। ওর কাছে গেলাম এবং বললাম সত্যি সত্যি বল তোর কতজন প্রেমিক আছে, নয়তো এ হবে তা হবে বলে ভয়ভীতি প্রদর্শন করলাম। সে আমাকে সাধুবাবা ভেবেই দুই হাতের আঙুল গুনতে গুনতে হিসাব করে তার বয়ফ্রেন্ড এর সংখ্যা আমাকে জানালো।
পাশের ফ্লাটের জুই আন্টির মেয়ে জয়াকে, —”কালো জামাই পাবি বলে রাগাতাম” জয়া এখন আমার বুকে তার মাথা রেখে নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে। মেয়েদের পিক.কম
গল্পের বিশ্লেষণঃ জুই আন্টি এবং আমাদের পাশাপাশি ফ্লাট। আন্টির মেয়ে জয়াকে মাঝে মাঝেই বলতাম তুই কালো জামাই পাবি। মূলত প্রধান উদ্দেশ্য ছিলো তাকে রাগানো। কিন্তু রিভেঞ্জ অফ নেচার বলে একটা কথা আছে না! অতঃপর জয়া আমারই বউ হয়ে গেল। আমি এখন তার জামাই, আমাদের সুখের সংসার। সে আমার বুকে মাথা রেখে নিশ্চিন্তে ঘুমায়, কেননা অন্যথায় তার ঘুমই আসে না।
হাজবেন্ড রাগান্বিত হলে আমি ঝগড়া করিনা। —কাজিন একে দূর্বলতা বলছে উত্তরে, দূর্বলতা না বরং জ্ঞান ও সভ্যতার বহিঃপ্রকাশ। —মা শিখিয়েছেন! মেয়েদের পিক.কম
গল্পের বিশ্লেষণঃ আমার হাসবেন্ড আমার উপর রাগান্বিত হলে আমি তার সাথে খারাপ আচরণ বা কলহে জড়িয়ে পড়ি না। এটা জানার পর আমার কাজিন (চাচাতো বোন) বলে এটা নাকি আমার ব্যর্থতা! আমি উত্তরে তাকে জবাব দিই এটা কোনভাবেই আমার ব্যর্থতা নয়। বরং এটা ভালোবাসার, জ্ঞানী ব্যক্তিত্বের এবং সভ্যতার পরিচয় মাত্র। কারণ আমার মা আমাকে এই শিক্ষাই দিয়েছেন আমাকে।
বুকপকেটে সর্বদা তাস এবং নিম পাতা রাখি। —একদিন রাকিব বললো, কাহিনি কী? উত্তরে বললাম, ভালো লাগে। —গার্লফ্রেন্ডের নাম যে তাসনিম! মেয়েদের পিক.কম
গল্পের বিশ্লেষণঃ আমার পকেটে সবসময় তাস এবং নিমের পাতা রেখে দিই। এটা একদিন আমার বন্ধু রাকিব দেখে কারণ জানতে চাইলে বলি আমার গার্লফ্রেন্ডের নাম তাসনিম। অর্থাৎ তাস+নিম মিলে তাসনিম। আসলে মজার ছলেই বিষয়টি বলা এবং করা।
পরিশেষে
এখানে আপনি অনুগল্প পড়ার পাশাপাশি আপনি অনুগল্প লিখে আমাদেরকে পাঠাতে পারবেন। আপনি চাইলে ২০ শব্দের অনুগল্প, ১০ শব্দের অনুগল্প অথবা ৫০ শব্দের অনুগল্প অথবা রোমান্টিক ছন্দ লিখে আমাদেরকে পাঠাতে পারেন। তবে অবশ্যই বিশ্লেষণ সহ পাঠাতে হবে। অনুগল্প পাঠানোর জন্য আপনাকে সর্বনিম্ন ১০ টি ছোটগল্প পাঠাতে হবে। অনুগল্প পাঠানোর জন্য আমাদের info.meyederpic@gmail.com মেইল ব্যবহার করুন। ধন্যবাদ সবাইকে, আজকের পোস্টটি এই অবধিই। গল্পের পরিসমাপ্তি এখানেই আজকের জন্য।